সব অসুখের মহৌষধের
নাম ‘কালিজিরা’
এক ধরনের ভেষজ
উদ্ভিদ ‘নাইজেলা সাটিভা’
বা ‘ব্ল্যাক সিড’
বা কালিজিরা ।
সামান্য গন্ধযুক্ত এ
বীজ ঝাঁজালো এবং
তিতা স্বাদযুক্ত অনুভূত
হয় । জানা যায়,
কালো রঙের এ
বীজটির ব্যবহার ছিল প্রায় দুই
হাজার বছর আগে
থেকে । সনাতন
চিকিৎসা ব্যবস্থায় কালিজিরার ব্যবহার এশিয়া
এবং আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে
ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কালিজিরা সম্পর্কে ‘ইবনে সিনহা’
বিশ্বখ্যাত আরব চিকিৎসাবিদ তার
ওষুধের বই দি
ক্যানন অব মেডিসিনে বলেছেন, এটি
এমনএক ধরনের বীজ যা
মনোবল ফিরিয়ে আনে এবং শরীরকে দুর্বলতা থেকে
মুক্ত করে উজ্জীবিত করে
তোলে ।
শরীরের জন্য
উপকারী বিভিন্ন ধরনের
প্রায় ১০০টি উপাদান কালিজিরার তেলে
রয়েছে । এ
তেলের প্রধান উপাদান
থাইমোকুইনান ছাড়াও আছেএ
পিনিন (প্রায় ১৫%),পিসাইমন (৪০%)
থাইমোহাইড্রোকুইনাইন,
ডিথাইমোকুইনাইন,এবং স্বল্প
মাত্রার অন্যান্য উপকারী
উপাদান। এতে ক্ষতিকারক সম্পৃক্ত চর্বির
পরিমাণ কম। এতে বিদ্যমান ফ্যাটি
এসিডের (১০%) মধ্যে
লাইনোলেইক এসিডই প্রায়
৫০-৬০%।
এর মধ্যে
বিদ্যমান বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,১৫
ধরনের অ্যামাইনো এসিড,
ওমেগা-৩ ও
ওমেগা-৬ বি-ভিটামিন, অসম্পৃক্ত ফ্যাটি
এসিডের উপাদানই রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতিকে শক্তিশালী করে
। এক সমীক্ষায় দেখা
গেছে সকল ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে
কালিজিরাকে নিয়েই গবেষণা
বেশি হয়েছে। প্রদাহজনিত সমস্যা
নিরসনে কালিজিরার মধ্যে বিদ্যমান ‘নাইলেজন’ নামক
উপাদান কার্যকরী ভূমিকা
পালন করে ।
শ্বাসনালির প্রতিবন্ধকতা থেকে
সৃষ্ট হাঁপানি, ঠাণ্ডাজনিত কাশি,
এবং ব্রংকাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের কষ্ট
লাঘবে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে। সেই
সঙ্গে থাইমোকুইনানের উপস্থিতি সোরিয়াসিস, একজিমা,এলার্জি, দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের
সমস্যাসহ সংক্রমণজনিত রোগের
প্রকোপ কমাতে এবং
ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা
পালন করে,সুস্থ কোষগুলোর স্বাভাবিকতা অক্ষুণ্ন রাখে
।
কালিজিরার তেল
ইনসুলিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে
তুলে ,ডায়াবেটিস-২
এর প্রকোপ কমিয়ে
আনতে সাহায্য করে,
অগ্নাশয়ের মধ্যস্থ বিটা-সেলগুলোকে উদ্দীপ্ত করে
এর মধ্যস্থ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন খনিজ
জৈবগুলো ডায়াবেটিস-২
সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ন্ত্রণে আনতে
সাহায্য করে।
কালিজিরা পেট
ফাঁপা রোধ করতে,
কৃমিনাশক, হজম সমস্যা
সমাধানে, এবং মূত্র
বৃদ্ধিকারক হিসেবেও ব্যবহার করা
হয়। এ বীজ মাংসপেশির শিথিলতা আনয়নে,
বুকে দুধের পরিমাণ
বৃদ্ধি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, এবং
স্ত্রী-রোগজনিত সমস্যা
দূর করতে সাহায্য করে।
ওষুধ হিসেবে কালিজিরার তেল
গ্রহণ করা যেতে
পারে অথবা সুস্বাস্থ্যের জন্য
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এ
উপাদানটি যুক্ত করা
যেতে পারে ।